প্রশ্ন
বর্তমানে আরবী বারো মাসের যে নামগুলো আমরা দেখতে পাই সেগুলোর নামকরণের কারণ কী?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
আরবী মাসের বর্তমান যে নামগুলো রয়েছে এগুলোর নামকরণের কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হল,
মহররম: এই মাসে আরবরা যুদ্ধ বিগ্রহ করাকে হারাম মনে করত এবং একে সম্মান করত। পাশাপাশি আরবরা নিজেদের স্বার্থ মোতাবেক এই মাসের মর্যাদাও নষ্ট করত। তারা কখনো এ মাসকে হালাল বানাতো, আবার কখনো হারাম বানাতো। তাদের এ আচরণের প্রতিবাদে একে এই নামে নামকরণ করা হয়েছে।
সফর: সফর অর্থ শূন্য। এ মাসে আরবরা যুদ্ধ ও সফরের জন্য বের হয়ে যেত। যার ফলে তাদের গৃহ শূন্য হয়ে থাকত। এ কারণে এই মাসের এ নাম রাখা হয়েছে।
রবিউল আউয়াল: বসন্ত ঋতুর প্রথম মাস।
রবিউল আখির: বসন্ত ঋতুর দ্বিতীয় মাস। আরবীতে রবি মানে বসন্ত। যেহেতু এই দুই মাস আরবে বসন্ত থাকত তাই এ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
জুমাদাল উলা: বরফ জমার প্রথম মাস।
জুমাদাল উখরা: বরফ জমার দ্বিতীয় মাস। জুমাদা মানে পানি জমে বরফ হওয়া। আরবে এই দুই মাসে ঠাণ্ডার কারণে পানি জমে বরফ হয়ে যেত। তাই এ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
রজব: রজব শব্দটি আরবী তারজিব শব্দ থেকে উদগত। যার অর্থ সম্মান করা। (আরবরা এ মাসকে যথেষ্ট সম্মান করত। এ কারণে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে।)
শাবান: শাবান অর্থ ছড়িয়ে পড়া। আরবরা রজব মাসে যুদ্ধ বিগ্রহ এড়িয়ে চলত। রজব শেষ হলে তারা যুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ত। এ কারণে এ মাসের এ নাম রাখা হয়েছে। কারো কারো মতে এ মাসে আল্লাহ তাআলা তাঁর রহমত চারদিকে ছড়িয়ে দেন, এ কারণে এ নাম রাখা হয়েছে।
রমজান: গ্রীষ্মের মাস। এ মাসে আরবে তীব্র গরম পড়ত। গরমে সব কিছু জ্বলে যাওয়ার উপক্রম হত। এ কারণে এ মাসের এই নাম রাখা হয়েছে। কেউ কেউ কারণ বর্ণনা করেছেন যে, এ মাসে বান্দার গুনাহ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হয়। তাই একে রমজান বলা হয়।
শাওয়াল: শাওয়াল শব্দের অর্থ হল, উটের লেঝ উঁচু করে সংগত হওয়া। বছরের এ সময় উট পরস্পরে সংগত হত, এ কারণে এ মাসের এই নাম রাখা হয়েছে।
জ্বিলকদ: বসে থাকার মাস। আরবরা এ মাসে যুদ্ধ ও সফর বন্ধ রেখে বাড়িতে বসে থাকত। এ কারণে এই মাসের এই নামকরণ করা হয়েছে।
জ্বিলহজ্ব: হজ্বের মাস। আরবরা এ মাসে হজ্ব পালন করত বিধায় এই মাসের এই নামকরণ করা হয়েছে।
তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/১২৯; রেসালায়ে নুজুম, পৃ. ২২৯
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/10156/article-details.html