প্রশ্ন
কিছুদিন আগে আমি অজু করার পর অসুস্থতার কারণে বেহুঁশ হয়ে যাই। কিছুক্ষণ পরই হুঁশ চলে আসে। পুনরায় নতুন অজু না করেই আসরের নামাজ পড়ি। এক ব্যক্তি বলল, ঐ অবস্থায় আমার আবার নতুন করে অজু করার প্রয়োজন ছিল। কারণ, বেহুঁশ হলে অজু ভেঙ্গে যায়। জানতে চাচ্ছি, উক্ত ব্যক্তির কথা কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
জ্বি, উক্ত ব্যক্তির কথা সঠিক। বেহুঁশ হলে অজু ভেঙ্গে যায়। হাদিস শরিফে এসেছে, আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত,
ثَقُلَ النَّبِيُّ فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ قُلْنَا لاَ هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ قَالَ ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ قَالَتْ فَفَعَلْنَا فَاغْتَسَلَ فَذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ قُلْنَا لاَ هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ قَالَتْ فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ
‘রাসূল (সা.) মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আল্লাহর রাসূল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রাসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি দাও। আয়েশা (রা.) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন। অতঃপর একটু উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর একটু হুঁশ ফিরে পেলে আবার তিনি জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রাসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। আয়েশা (রা.) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৮৭]
উক্ত হাদিস থেকে বুঝা যায়, রাসূল (সা.) বেহুঁশ হয়ে যাওয়ার কারণে গোসল করেছিলেন। তবে এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরাম একমত যে, অজু করলেও যথেষ্ট হয়ে যাবে। ইমাম নববি (রা.) লিখেন,
أَجْمَعَتْ الْأُمَّةُ عَلَى انْتِقَاضِ الْوُضُوءِ بِالْجُنُونِ وَبِالْإِغْمَاءِ وَقَدْ نَقَلَ الْإِجْمَاعَ فِيهِ ابْنُ الْمُنْذِرِ وَآخَرُونَ
‘উলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, পাগল হয়ে যাওয়া ও বেহুঁশ হয়ে যাওয়ার দ্বারা অজু ভেঙ্গে যাবে। ইবনে মুনযির ও অন্যান্যরা এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের ইজমা সংঘটিত হওয়ার কথা বর্ণনা করেছেন।’ [আল মাজমু, ২/২১]
সুতরাং আপনার সেদিনের আসরের নামাজ হয়নি।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/10066/article-details.html